সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন যেন এখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন গড়ে তুলতে না পারলে আপনার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। প্রতিনিয়ত স্ক্রিনে আটকে থাকা মানসিক চাপ, ঘুমের ব্যাঘাত ও কম ফোকাসের মতো সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। ঠিক এই কারণেই “ডিজিটাল ডিটক্স” বা সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন প্রয়োজন। আপনি যদি আসলেই মিডিয়া মুক্ত জীবন গড়ে তুলতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস মেনে চলার চেষ্টা করুন।
দিন নির্দিষ্ট করে ‘ডিটক্স টাইম’
সপ্তাহে এক দিন নির্দিষ্ট করুন—যেমন, রবিবার। যেদিন সকালের রাত পর্যন্ত স্মার্টফোন-মুক্ত থাকবেন। শুরুতে ৩–৪ ঘণ্টা দিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন। কারণ শুরুর দিকে আপনি পুরো দিন সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত থাকা সম্ভব নয়। তাই প্রথম প্রথম তিন চার ঘণ্টা স্মার্টফোন মুক্ত থেকে অভ্যাস করে তুলুন।
নোটিফিকেশন কন্ট্রোল
অ্যাপে গিয়ে পুশ নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন। যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা হোয়াটসবে়ট–এর লোকাল ও গ্রুপ নোটিফিকেশন বেছে বেছে বন্ধ করুন। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিটি অ্যাপসে যখন নোটিফিকেশন চলে আসে তখন আপনি স্মার্টফোন হাতে নিতে বাধ্য।কারন আপনি কৌতূহল বসত আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় কি মেসেজ এসেছে তা দেখতে আগ্রহী। তাই আপনার বিভিন্ন গ্রুপ কিংবা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন চ্যাট লিস্টের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখুন।
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন করুন
ফিজিক্যাল ডিটক্স জোন
ঘরে এমন একটি জায়গা করুন যেখানে মোবাইল আনবিধেয়। বইয়ের মেঝে, মিউজিক রুম, ডাইনিং টেবিল, যেকোন জায়গা বেছে নিন। যেখানে আপনি খুব সহজে স্মার্টফোন মুক্ত চলাফেরা করতে পারবেন। কখনো বই পড়ার অভ্যাস করুন কখনো গান শোনার অভ্যাস করেন কখনো ডাইনিং টেবিলে বসে বসে অফলাইনে গেম কার চেষ্টা করুন।
টেক-ফ্রি হবি গ্রহণ
রঙ করা, রান্না শেখা, হাঁটা, বাগান করা এসব কাজে মন দিন। এগুলো শুধু সময় কাটে না, মানসিক প্রশান্তিও বাড়ায়। রং দিয়ে কিছু আঁকার চেষ্টা করুন দেখবেন একটানা তিন-চার ঘন্টা সময় আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন ব্যয় হয়ে গেছে। বাগানে হাঁটাচলা করুন এবং বাগানের বিভিন্ন গাছ পরিদর্শন করুন দেখবেন আপনি দুই তিন ঘণ্টা সময় সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন পার হয়ে গেছে। এভাবে আপনি নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখুন যাতে আপনি স্মার্টফোন মুক্ত কিছুটা সময় কাটিয়ে আপনি স্মার্ট ফোন মুক্ত চলাফেরা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।
মনিটরিং টুল ব্যবহার
“Moment”, “Offtime” বা “Forest”–এর মতো অ্যাপ দিয়ে নিজে সময় ট্র্যাক করুন। সময় বাড়লে নিজেকে সতর্ক করেন। আপনি কত সময় পর্যন্ত স্মার্টফোন মুক্ত থাকতেছেন তার সময় গুলো ট্র্যাক করুন। লেখালেখি করার অভ্যাস করুন লেখালেখি করলে খুব বেশি সময় ধরে আপনি স্মার্ট ফোন মুক্ত থাকতে পারবেন।
Read More : ইউটিউব চ্যানেল রিমুভ হওয়ার মুল কারণ ও সম্পূর্ণ গাইডলাইন
ডেইলি স্ক্রিন রিপোর্ট’ লেখা শুরু করুন
রোজ রাতে ৫–২০ মিনিট সময় নিয়ে লিখুন—আজ কী দেখলাম, কী বাদ দিলাম এবং কী অনুভূত হলো। আপনি যখন স্মার্টফোনমুক্ত সময় ব্যয় করা শুরু করবেন তখন রাতে ঘুমানোর আগে অথবা ঘুম থেকে ওঠার পরে তা পর্যালোচনা করার চেষ্টা করুন। স্মার্ট ফোন মুক্ত থাকার সময়ে আপনার কি কি লাভ এবং ক্ষতি হলো তা তুলে ধরার চেষ্টা করুন।
টেক-ফ্রি সকেন্ডারি ডিভাইস
মোবাইল না হাতেও থাকলে—বুক রিডার, মিউজিক প্লেয়ার বা ডিজিটাল ফটো ফ্রেম—এসব secondary ডিভাইস ব্যবহার করুন। যাতে আপনি শুরুর দিকে হাতে স্মার্টফোন নেই সেটি যাতে আপনি আন্দাজ করতে না পারেন। বকরিদার মিউজিক প্লেয়ার অথবা ডিজিটাল ফটো ফ্রেম এইসব বিষয়ে আপনার হাতে থাকলে স্মার্টফোনের দিকে আপনার আর নজর যাবে না।
আপনি যদি আসলেই সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন গড়ে তুলতে চান তাহলে আপনাকে শুরুর দিকে একটু কষ্ট করতে হবে। এবং একটা সময় গিয়ে আপনি সত্যি সত্যি সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন গড়ে তুলতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলে সোশ্যাল মিডিয়া মুক্ত জীবন গড়ে তোলার যে সাতটি টিপস আপনাকে দেওয়া হয়েছে তা যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে খুব সহজে আপনি নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বের করে নিয়ে আসতে পারবেন।