ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) হচ্ছে একটি বুদ্ধিমান সফটওয়্যার যার মাধ্যমে কোন ভিডিও কাকে দেখানো হবে বা কোন ভিডিও কিভাবে র্যাংক করাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে।ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) টি আপনার ভিডিওর ভিউ, সাবস্ক্রাইবার এবং ইনকামের জন্য অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি একজন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইউটিউবে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী।
ইউটিউব অ্যালগরিদম কীভাবে কাজ করে?
ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) কিভাবে কাজ করে তা আমাদেরকে ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।
ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) মূলত ৩টি জায়গায় অ্যালগরিদম ব্যবহার করে কাজ করে।
Homepage (Home)
যেই ভিডিওগুলো দর্শকের আগ্রহের সাথে মিল পাওয়া যায়, তলসে ভিডিওগুলো Homepage-এ দেখানো হয়। যেমন আপনি নিজেকে একজন দর্শক মনে করুন। আপনি ইউটিউবে গিয়ে যে ক্যাটাগরের ভিডিওগুলো সার্চ করবেন, ইউটিউব অ্যালগরিদম এর পরেরবার থেকে সে ক্যাটাগরির ভিডিও গুলো আপনার ইউটিউবের হোমপেজে শো করাবে।
Read More : ফেসবুক অ্যালগরিদম (Facebook Algorithm) কিভাবে কাজ করে? সম্পুর্ণ গাইডলাইন
Suggested Videos (সার্জেস্টেড ভিডিও)
আপনি যখন ইউটিউবে কোন একটি ভিডিও দেখেন, তখন সাথে সাথে পাশে/নিচে কিছু ভিডিও চলে আসে,এই ভিডিও গুলো কেমন হতো Suggested Videos বলা হয়ে থাকে। কেউ যখন ভিডিও দেখবে তখন আপনার ভিডিওটি যদি মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয় এবং ভালো র্যাঙ্ক থাকে তখন Suggested Videos হিসেবে শো করাবে।
Search (সার্চ ফলাফল)
কেউ যখন কোন ভিডিও সার্চ করে তখন কোন ভিডিওটি সার্চ র্যাংকে নিয়ে আসবে তা youtube অ্যালগরিদম নির্ধারণ করে। কেউ কিছু সার্চ করলে কোন ভিডিওগুলো আগে দেখানো হবে, তা ওই ভিডিওর প্রতি মানুষের আগ্রহের উপর নির্ভর করে।
অ্যালগরিদম কী দেখে সিদ্ধান্ত নেয়?
ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) প্রধানত নিচের বিষয়গুলোকে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেয়।
Watch Time (দর্শকের দেখা সময়)
একটি ভিডিও একজন কতক্ষণ পর্যন্ত দেখেছে? যে ভিডিও মানুষ যত বেশি এভারেজ সময় বেশি দেখবে, সেই ভিডিও কে সবচেয়ে বেশি উপরে নিয়ে আসবে।
যদি কোন ভিডিও বেশিরভাগ মানুষ ৫০–৭০% বা তার বেশি অংশ দেখে, ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) ধরে নেয় যে এটি ভালো ভিডিও।
Click-Through Rate (CTR)
কতজন মানুষ আপনার ভিডিও এর থাম্বনেইল ও টাইটেল দেখে ভিডিওতে ক্লিক করেছে তা হিসাব করে ভিডিও র্যাংকে নিয়ে আসে।
সাধারণত ৫–১০% CTR ভালো ধরা হয়।
Engagement (ইনটার্যাকশন)
আপনার ভিডিওতে কতজন দর্শক লাইক, কমেন্ট, শেয়ার বা সাবস্ক্রাইব করলো তা হিসাব করা হয়।
আপনার ভিডিওতে যত বেশি Engagement আসবে আপনার ভিডিও তত ভালো র্যাংকিং এ আসবে।
Consistency (নিয়মিত ভিডিও আপলোড)
আপনার চ্যানেক টি ভালো র্যাংকে নিয়ে আসার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা। নিয়মিত ভিডিও আপলোড করলে ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) আপনার চ্যানেলকে গুরুত্ব দিবে। আপনার চ্যানেলের ভিডিও গুলো ইউটিউব বেশি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।
কিভাবে অ্যালগরিদমকে কাজে লাগিয়ে ভিডিও র্যাংক করাবেন?
আপনি যখন ইউটিউব সম্পর্কে জেনে যাবেন তখন আপনাকে ইউটিউবের এই আলগরিদম কে কাজে লাগিয়ে আপনার চ্যানেলকে দ্রুত রাঙ্কে নিয়ে আসতে হবে। দ্রুত ইউটিউবের সফলতা পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে আপনার ইউটিউব অ্যালগরিদম (Youtube Algorithm) কে কাজে লাগানো।
আকর্ষণীয় থাম্বনেইল ও টাইটেল বানান
আকর্ষণীয় থাম্বেল এবং টাইটেল দেওয়ার চেষ্টা করুন। যাতে দর্শক আপনার থাম্বেল দেখে এবং টাইটেল দেখে ভিডিওতে ক্লিক করতে চায় ক্লিক করতে চায়। আপনি যদি নিজের ভিডিওর নিজে নিজে ক্লিক করেন তখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওটি আর র্যাংক করার সম্ভাবনা নাই। তাই বাস্তবে মানুষকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।
ভিডিওর শুরুতে Viewers ধরে রাখুন (Hook)
ভিডিওর শুরু থেকেই আপনার দর্শকদের ধরার চেষ্টা করেন। আপনার ভিডিওতে প্রথম ১৫–৩০ সেকেন্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ কিশোর রাখার চেষ্টা করুন। ভিডিওর শুরুতে এমন কিছু বক্তব্য রাখুন যা শুনে আপনার দর্শক পুরো ভিডিও দেখতে রাজি হয়।
ভিডিওর দৈর্ঘ্য ঠিক রাখুন
আপনার ভিডিও থেকে ওয়াচ টাইম যত বেশি আসবে আপনার ভিডিওটি তত বেশি টপে লাগবে। ভিডিও যদি ৮–১২ মিনিটের হয় তাহলে Watch Time ভালো হয়।
খুব বেশি বড় বা বেশি ছোট ভিডিও না রাখাই ভালো (যদি সেটা দরকার না হয় আরকি)
Read More : ইউটিউব চ্যানেল রিমুভ হওয়ার মুল কারণ ও সম্পূর্ণ গাইডলাইন
Playlists তৈরি করুন
একটা চ্যানেলের জন্য প্ল্যালিস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যখন আপনার চ্যানেলটা ভিজিট করবে তখন আপনার প্লে লিস্ট গুলো চেক করবে। ব্ল্যাকলিস্টের ভিডিও এড করা থাকলে মানুষ সহজে ক্যাটাগরি দেখে প্লায় লিস্ট চেক করে ভিডিও বের করতে পারবে। মানুষ যদি একটার পর একটা আপনার ভিডিও দেখে, YouTube ধরে নেয় আপনি মূল্যবান।
কী করলে অ্যালগরিদমে পিছিয়ে যাবেন?
বারবার clickbait দিয়ে ঠকানোর প্ল্যান করলে। আপনার নিজের ভিডিওতে যদি যে কোন একটা মোবাইল দিয়ে বারবার ক্লিক করেন তাহলে আপনি আলগরিদম থেকে পিছিয়ে যাবেন।
আমার ইউটিউব ভিডিওতে যদি ভুল বা Misleading তথ্য দিয়ে থাকেন তাহলে আপনি অ্যালগরিদম থেকে পিছিয়ে যাবেন।
আপনার ভিডিও কোয়ালিটি ভালো করুন। Low quality ভিডিও বা অডিও অথবা মান খারাপ ভিডিও এড়িয়ে চলুন।
আপনি যদি একজন সফল ইতুপার হতে চান উপরের অ্যালগরিদম সম্পর্কে আপনার ভালো জ্ঞান ধারণা করতে হবে। একটি ভিডিও তৈরি করা এখন আপলোড করার সময় এই বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে। আপনি যদি এই বিষয়গুলো মেনে আপনার youtube চ্যানেল তৈরি করেন এবং নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে এই দিয়ে ফেল করে মেনে চলেন তাহলে আপনি খুব দ্রুত আপনার চ্যানেলটিকে উপরের র্যাংকে নিয়ে যেতে পারবেন।